সতীর্থের বউ নিয়ে উধাও আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা!

খেলাধুলা ডেস্ক •  যেকোনো খেলায় জয়-পরাজয় থাকে। তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও হয়। অনেক ভালো-খারপ সময়ও আসে। তবে সম্পূর্ণ ভিন্ন ইস্যুতে এক নারীর জন্য সমালোচিত হতে হয়েছে আর্জেন্টিনা ফুটবল দলকে। যতটা আগে তাদের কখনো হতে হয়নি। ফুটবলকে জড়িয়ে এক নারী মডেলের কাণ্ডে দেশটির ফুটবলে তোলপাড় থেমে নেই।

বেশ সময় পেরিয়েছে ফুটবলার মাউরো ইকার্দির প্রেমে পড়ে ঘর ছাড়েন আরেক ফুটবলার ম্যাক্সি লোপেজের মডেল বউ। যে সম্পর্কের জেরে রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন ইকার্দিও।

তবে বহুদিন পর এ ব্যাপারে ইকার্দিকে ক্ষমা করে দিলেন লোপেজ। শুধু তা-ই নয়, ওয়ান্ডা নারা নামের ওই মডেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছাড়াছাড়িতে ভূমিকা রাখায় ইকার্দিকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন আর্জেন্টাইন এই ফরোয়ার্ড।

ম্যাক্সি লোপেজ ২০০৮ সালে মডেল ওয়ান্ডা নারাকে বিয়ে করেন। তাদের সংসার ভালোই চলছিল। তিন সন্তান পৃথিবীর মুখ দেখেছে। তাদের ঘিরেই সুখের সংসার আবর্তিত ছিল। আর সেই সংসারেই ঝড় তোলেন আরেক ফরোয়ার্ড মাউরো ইকার্দি। এ যেন লোপেজের পা থেকে বল কেড়ে নিয়েই গোল করার মতো ঘটনা!

ঘটনাটা ২০১২ সালের। ওই মৌসুমে সাম্পদোরিয়াতে যোগ দেন ইকার্দি। দুজনেই আর্জেন্টাইন হওয়ায় ইকার্দি ও লোপেজের মধ্যে গড়ে ওঠে বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তবে মৌসুম শেষ না হতেই তা শেষ হয়ে যায়। কারণ ততদিনে লোপেজকে ছেড়ে যে নিঃসঙ্গ ইকার্দির প্রেমে মজেছেন তিন সন্তানের জননী ওয়ান্ডা। এক পর্যায়ে লোপেজের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে ইকার্দির ঘরে চলে যান সুন্দরী ওই মডেল।

এদিকে ত্রিভুজ প্রেমের এই ঘটনা যে শুধু লোপেজের ঘর পুড়িয়েছে, তা কিন্তু নয়। বরং আগুন জ্বেলে দেয় গোটা আর্জেন্টাইন ফুটবলেও। যার উত্তাপ স্পর্শ করে ফুটবল ইশ্বরখ্যাত ডিয়েগো ম্যারাডোনাকেও। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তী তো তখন সরাসরি ইকার্দিকে আজীবন নিষিদ্ধের দাবি তোলেন। ম্যারাডোনা বলেন, যে বন্ধুর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নেয় তাকে কখনো জাতীয় দলে ডাকা উচিত না। তাকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হোক।
অন্যদিকে ঘর পোড়া লোপেজের সঙ্গে মেসিসহ জাতীয় দলের বেশকিছু সদস্যের ভালো সম্পর্ক ছিল। যে কারণেই নাকি ক্লাব ফুটবলে বছরের পর বছর দুর্দান্ত খেলেও মূল দলে ডাক পাচ্ছিলেন না ইকার্দি। আর্জেন্টিনার পক্ষে একটিমাত্র ম্যাচ খেলা এই ফরোয়ার্ড ওয়ান্ডাকে বিয়ের পরের তিন বছর ক্লাব ফুটবলে গোলবন্যা বইয়ে দিয়েও ঢুকতে পারেননি আর্জেন্টিনা দলে।

এদিকে ছাড়াছাড়ির পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একে অন্যকে খোঁচা দিয়েই সময় পার করেছেন সাবেক দম্পতি ওয়ান্ডা ও লোপেজ।

তবে গত বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে ইকার্দিকে ক্ষমা করার পাশাপাশি ওয়ান্ডাকে খোঁচা দিলেন লোপেজ। বলেন, আমি ইকার্দিকে ক্ষমা করে দিয়েছি এবং ওর সঙ্গে আমার আর কোনো সমস্যা নেই। আমার জীবনে এখন ফুটবল ছাড়া একটাই লক্ষ্য, সেটা হলো আমার বাচ্চাদের খুশি করা।

এছাড়া ইকার্দিকে ক্ষমা করার খবরটি প্রকাশ পাওয়ার পর ইনস্টাগ্রামে আরেকটু যোগ করেন লোপেজ। তিনি বলেন, আমি শুধু মাউরোকে ক্ষমাই করিনি, ডব্লুকে (ওয়ান্ডা) নিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে ধন্যবাদও দিতে চাই…

আর এই খোঁচার জবাবে ওয়ান্ডাও দিয়েছেন পাল্টা জবাব। নিজের ইনস্টাগ্রামে লোপেজকে লিখেছেন, সম্মান হলো টাকার মতো। আপনি চাইতে পারেন, কিন্তু সেটা অর্জন করাই শ্রেয়।

তবে লোপেজকে ছাড়ার পর ওয়ান্ডার সঙ্গে ইকার্দির ঘরবাঁধার পরবর্তী ঘটনা প্রবাহুলোপেজের ইঙ্গিতকেই সমর্থন করে। কেননা, বিয়ের পর ওয়ান্ডাকে নিজের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেন ইকার্দি। এরপর থেকেই ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয় আর্জেন্টাইন এই ফরোয়ার্ডের। যার প্রেক্ষিতে গত মৌসুমের শেষ দিকটায় ফর্মের তুঙ্গে থাকতেও বসিয়ে রাখা হয়েছিল ইকার্দিকে।

আর চলতি মৌসুমে তো সেখানে থাকতেই পারলেন না। ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে ধারে চলে যেতে হয়েছে। তবে সেখানে এসেও ঝামেলা পাকিয়েছেন স্ত্রী ওয়ান্ডা। বলেন, পিএসজি নাকি ইকার্দির সম্ভাব্য গন্তব্যের মাঝে সবচেয়ে বাজে পথ!

তবে তার এমন তীর্যক উক্তি পিএসজি’র ভালোভাবে না নেয়ারই কথা। সেটা তো আর বলারও অপেক্ষা রাখে না। আর এই ত্রিভূজ সম্পর্কের খোঁচাখুঁচির শেষ কোথায়? সেটা তো সময়ই বলবে।